অতিমাত্রায় স্মার্টফোনের উপর নির্ভরতা মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষতিগ্রস্ততার অন্যতুম প্রধান কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। বর্তমানের এই ডিজিটাল দুনিয়ার সাথে তাল মেলাতে গিয়ে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সারাক্ষণ স্মার্টফোনের দিকে তাকিয়ে থাকার প্রবণতা বাড়ছে। এতে তারা হাতের মুঠোয় সারা বিশ্বের জ্ঞান নিয়ে আসতে পারছে ঠিকই, কিন্তু তাদের মানসিক ক্ষতিও বাড়ছে। এগুলো মস্তিষ্কের ক্ষমতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সৃজনশীলতাকে হ্রাস করছে।
মানুষের মস্তিষ্কের মধ্যে সৃষ্ট মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা অতিমাত্রায় সীমিত। মস্তিষ্কের বেশিরভাগ মনোযোগ যদি ফোনের পেছনে দেওয়া হয়, তাহলে অন্যান্য যেকোনো কাজের প্রতি মনোযোগ কমে যায়, কাজ যতই ছোট হোক নাহ কেন। এর ফলে মানুষের সেসব কাজে দক্ষতা কমে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
মানুষের দৃষ্টিসীমার মাঝে একটি ফোন থাকা মানেই মনোযোগ কমে যাবে। মানুষ ছোটখাট কাজ করতে ব্যর্থ হবেন এবং স্মৃতিশক্তি কমে যাবে। ফোন পকেটে, ব্যাগে এমনকি পাশের ঘরে থাকলে মনোযোগে এত ব্যাঘাত ঘটে না। মোবাইলফোন নিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাটি আমাদের স্ট্রেস হরমোন বাড়িয়ে দেয়। এই স্ট্রেস হরমোনের কারণে ওজনও বেড়ে যায়।
স্মার্টফোন একজন মানুষ এর কর্মক্ষেত্রে ক্রমাগত বাধা এবং বিভ্রান্তি তৈরি করে যা একজন মানুষের কর্মজীবনে এবং ব্যক্তিগত জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। যারা নিয়মিত ইমেল এবং ফোন কল অথবা ফোনের নোটিফিকেশন দ্বারা বিভ্রান্ত হন, যেকোনো কাজে তাদের আইকিউ হ্রাসের পরিমাণ ১০ পয়েন্ট, যা আইকিউ এর উপর মারিজুয়ানা ধূমপানের প্রভাবের দ্বিগুন বলে গবেষকরা বলে থাকেন।
একটি গবেষণায় ১,১০০ জন অংশগ্রহণকারীর অর্ধেকেরও বেশি বলেছেন যে তারা সবসময় তাৎক্ষণিকভাবে বা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি ইমেইলে সাড়া দেন, অন্যদিকে ২১% স্বীকার করেছেন যে তারা এটি করার জন্য একটি সভায় বাধা দেবেন। স্মার্টফোনের ফলে সৃষ্ট ক্রমাগত বাধাগুলি রাতের ঘুম হারানোর মতো একই প্রভাব ফেলতে পারে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার চেয়ে মারাত্মক প্রভাব ও ফেলতে সক্ষম।
বর্তমা প্রজন্মের তরুণ মস্তিষ্ক পূর্ববর্তী প্রজন্মের চেয়ে দ্রুত তথ্য প্রক্রিয়াজাত করতে পারে, এবং তাই তারা এক কাজ থেকে আরেক কাজে সহজেই স্থানান্তর করতে পারে। এই আধুনিক প্রযুক্তির যুগে বেড়ে ওঠা লোকেরা কাজ স্থানান্তরের জন্য আরও ভাল শর্তযুক্ত হতে পারে। কিন্তু এই গবেষণাটি একটি মূল পাল্টা থিমও প্রকাশ করছে যা আমাদের এটি জানাচ্ছে যে পূর্ববতী প্রজন্মের বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্করা আরও স্থিতিস্থাপক এবং দীর্ঘস্থায়ী মনোযোগের কারণে মনোনিবেশ এবং শেখার ক্ষমতাতে মানসিকভাবে উচ্চতর হতে পারে।
[…] […]
[…] […]